top of page

কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জুঅবিমিশ্রের

দিকে কবির যাত্রা

 

আহমদ ময়েজ

একটা সময় ছিল, আমরা যৌথ প্রয়াসে আগুন কুড়াতাম। যৌথভাবে টেলিফোনের অতিরিক্ত বিল ভরতে হতো। একদিন দেখি মোবাইলের অতিরিক্ত বিল আশি পাউণ্ডে। সে কথাটাও অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে বললাম, কবি আমার মোবাইলের বিলতো অতিরিক্ত আশি পাউণ্ড। কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু বললেন, 'আমারও নব্বই পাউণ্ড অতিরিক্ত' বলেই ঝাড়ি দিলেন, বাদ দেন তো এসব। আমরা কবি এতোসব হিসেব করলে কি চলে?
আমি মানতে পারিনি। তর্ক জুড়ে দিলাম। বললাম, এটাকে কবি মানস বলে না। এটা সম্পূর্ণ খেয়ালীপনা, কাণ্ডজ্ঞানহীন। একজন কবি কেন কাণ্ডজ্ঞানহীন হবেন? কবিরা সবচে বেশী স্পর্শকাতর...

কিন্তু এতোসব কথার ভেতরও কাণ্ডজ্ঞানহীনের বিল দ্রুত বেড়ে চলেছে। যে সময়ের কথা বলছি তখন আর এখনকারের ন্যায় আনলিমিট ফোন কল ছিল না। শর্তহীন বন্ধুত্বের তার্কিক সময় এভাবেই ব্যয় হয়েছে।

36503167_10156661168338442_1645436975081

সে সন্ধি এক সময় একা হয়ে যায়। আমরা হাঁটতে থাকি আপন মনে। কিন্তু মানুষ কখনো একা থাকতে পারে না। যতোবার বান্ধব খুঁজেছি কেউ সেই বন্ধুত্বের স্বাদ মেটাতে পারেনি। মঞ্জুর বন্ধুত্ব এমনই এক নেশাগ্রস্থ বাতিক। দেলোয়ার হোসেন মঞ্জুর তৃপ্তি আর কেউ দিতে পারেনি, সেই স্বাদ কেউ মেটাতে পারেনি। তবু আত্ম-অভিমানে একাই হেঁটেছি। বন্ধুত্বের মধ্যখানে যারা বিষ রচনা করেছিল এখন তারা নিজেরাই সেই বিষপানে ভারবাহী জীবনযাপন করছে।

থাক সে সব কথা। অভিমানটা শুধু কবি মঞ্জুর দিকেই যায় এ জন্য যে, এসব বুঝার বুদ্ধিটুকু কবির ছিলো কিন্তু সেটা তিনি কাজে লাগাননি।
এসবের ভেতর দিয়েও যখন দেখি কেউ কবি মঞ্জু মিস্ত্রাল ওরফে ব্ল্যাদিমির জয়নুদ্দিন ওরফে কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জুর কবিতা নিয়ে দুচারটি বাক্য ব্যয় করেন তখন ভেতরটা খুব কাতরাতে থাকে। হাসিও পায়। সেসব দুচার লাইন পড়লেই উপলব্ধি হয় তারা কতোটুকু কবির কবিতাকে আত্মস্থ করেছেন। না তারা কবির কবিতার উপরি কাঠামো বুঝেন আর না তারা ভেতরে মর্মূল স্পর্শ করতে পারেন। কেবল কবিকে খুশি করার জন্য কিছু পেলব ভাষার তৈলাক্ত রচনা তৈরী করেন যা পাঠ শেষে কবি হোসেন মঞ্জুকে খুঁজে পাওয়া যায় না, কবিতা তো নয়ই।
আমরা যে নগর-যাতনায় সন্ন্যাস জীবন ধারন করে আছি সেই বোধি জীবনের পালক হয়ে নগর বার্মিংহামে কবি দেলোয়ার হোসেন মঞ্জু বসতি স্থাপন করেন। নিজের চারদিকে এমন এক বর্ম রচনা করেন যেখানে সহসা প্রবেস করা অনেকের ক্ষেত্রে দুঃসাধ্য। তিনি অপ্রচলন বিষয়কে মিথ তৈরীতে উস্তাদ। তিনি নিজেই মিথমন্ত্র। হাজার বছর ধরে মিথের শক্তি দিয়ে মানুষ নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে আসছে। এখনো হচ্ছে। কবি মঞ্জু সে দিকে হাঁটেননি। বরং নিজেই আধনা বিষয়কে মিথের মর্যাদায় উত্তীর্ণ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রেই এ শক্তি অন্যের উপলব্ধিজাত বিষয় হয়ে ওঠেনি।

জগতের যতো রাগ আপনার, তোমার, তোর প্রতি। বন্ধু হারানোর বেদনা শুধু চোখের জল বা বিষন্নতা অনেকেই দেখেছে কিন্তু গুর্দা ফাটা আর্তনাদ কেউ দেখেনি। এখন তোর যাত্রা অবিমিশ্রের দিকে... ভালো থাক আমাদের মঞ্জু

bottom of page